SIR Documents List: পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা Special Intensive Revision (SIR) প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে। বিভিন্ন সংবাদ সূত্র অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে এই কর্মসূচির ঘোষণা হতে পারে। নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে যে, দেশজুড়ে বিতর্ক সত্ত্বেও এই প্রক্রিয়া চলবে এবং ভোটারদের তথ্য যাচাই ও সংশোধনের কাজ করা হবে। এই প্রক্রিয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জমা দিতে হবে। আপনার নাম যাতে তালিকা থেকে বাদ না যায়, তার জন্য আগে থেকেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন।
এই সংশোধন প্রক্রিয়ায় নতুন ভোটারের নাম যুক্ত করা হবে এবং মৃত, অবৈধ বা ভুয়ো ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। বুথ লেভেল অফিসার (BLO) বাড়ি বাড়ি গিয়ে নথি যাচাই করবেন। তাই, সঠিক কাগজপত্র না থাকলে আপনার নাম তালিকা থেকে বাদ যাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।
১১টি গুরুত্বপূর্ণ নথির তালিকা (SIR Documents List)
নির্বাচন কমিশন পরিচয় এবং বয়স যাচাইয়ের জন্য ১১টি বৈধ প্রমাণপত্র নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে যেকোনো একটি থাকলেই চলবে।
- কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের কর্মীদের পরিচয়পত্র বা পেনশন সার্টিফিকেট।
- ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে জারি হওয়া যেকোনো সরকারি নথি, যেমন ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরের কাগজ।
- সঠিক কর্তৃপক্ষ দ্বারা জারি করা জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate)।
- পাসপোর্ট (Passport)।
- মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষার বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট।
- রাজ্য কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রদত্ত স্থায়ী বাসস্থানের প্রমাণপত্র।
- বনাধিকার সার্টিফিকেট (বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য)।
- জাতিগত শংসাপত্র (SC, ST বা OBC Certificate)।
- জাতীয় নাগরিক রেজিস্টার (যেখানে প্রযোজ্য)।
- রাজ্যের পরিবার রেজিস্ট্রেশন নথি।
- সরকারি জমি বা বাড়ির বরাদ্দপত্র।
জন্ম তারিখ অনুযায়ী সংশোধনের নিয়ম
ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য জন্ম সালের উপর ভিত্তি করে তিনটি ভিন্ন বিভাগে ভাগ করা হয়েছে, এবং প্রত্যেকের জন্য নিয়ম আলাদা।
১. ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে জন্ম হলে:
যাঁরা এই তারিখের আগে জন্মেছেন, তাঁদের জন্য প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ। উপরে উল্লিখিত ১১টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি জমা দিলেই হবে। যদি আপনার নাম ২০০২ সালের পশ্চিমবঙ্গ ভোটার তালিকায় থাকে, তবে সেই পাতার একটি কপিই যথেষ্ট, অন্য কোনো নথির প্রয়োজন হবে না। তবে, ২০০২ সালের তালিকায় নাম না থাকলে বাবা বা মায়ের ২০০২ সালের তালিকার কপি জমা দিতে হবে। সেটিও না থাকলে উপরের ১১টি ডকুমেন্টের একটি জমা দিতে হবে।
২. ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০০২ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে জন্ম হলে:
এই সময়কালের মধ্যে জন্ম হলে দুটি নথি জমা দিতে হবে। নিজের জন্য উপরের ১১টি নথির মধ্যে একটি এবং আপনার বাবা বা মায়ের জন্য একটি নথি জমা করতে হবে। বাবা বা মায়ের জন্য ২০০২ সালের ভোটার তালিকার কপি বা উপরের ১১টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি দেওয়া যেতে পারে।
৩. ২০০২ সালের ১ জানুয়ারির পরে জন্ম হলে:
যাঁরা ২০০২ সালের পরে জন্মেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে তিনটি কাগজ জমা দিতে হতে পারে। নিজের জন্য একটি, এবং বাবা-মায়ের জন্য দুটি। এই গ্রুপের জন্য যাচাই প্রক্রিয়া আরও কঠোর হতে পারে, তাই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা সঠিকভাবে মেনে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
পশ্চিমবঙ্গে SIR প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে যে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা হবে। যদি আপনার কাছে উপরে উল্লিখিত ১১টি ডকুমেন্টের একটিও না থাকে এবং ২০০২ সালের ভোটার তালিকাতেও নিজের বা পরিবারের কারো নাম না থাকে, তাহলে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে হবে। আপনার নাম তালিকায় থাকবে কি না, তা আপনার নথি এবং নির্বাচন কমিশনের পর্যালোচনার উপর নির্ভর করবে.
