2012 TET Certificate: সুপ্রিম কোর্টের এক নির্দেশের পর ২০১২ সালে টেট (TET) উত্তীর্ণ কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE) একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে। ২০১২ সালের টেট উত্তীর্ণদের শংসাপত্র বা সার্টিফিকেট প্রদানের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে পর্ষদ, যা সেই সময়ে দেওয়া হয়নি। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কর্মরত শিক্ষকদের দুশ্চিন্তামুক্ত করাই মূল লক্ষ্য।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, পর্ষদ চায় না কর্মরত শিক্ষকরা কোনো বিপদে পড়ুন। তিনি বলেন, “সার্টিফিকেট আমরা দেব ঠিকই। কিন্তু তার আগে সেই সময়ের নিয়মকানুন কী ছিল, কেন সেসময় সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি, আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করব, এগুলি সবটা ভাল করে দেখে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” তাঁর এই মন্তব্যে স্পষ্ট যে, পর্ষদ বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক এবং আইনি দিক খতিয়ে দেখেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চায়।
কেন দেওয়া হয়নি ২০১২ সালের সার্টিফিকেট?
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে যে, ২০১২ সালে উত্তীর্ণদের কেন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। এর মূল কারণ হলো, সেই সময় টেট পাশের সার্টিফিকেট দেওয়ার কোনো নিয়ম বা প্রথা চালু ছিল না। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকে টেট পাস সার্টিফিকেট দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পরে নেওয়া হয়।
- সার্টিফিকেট প্রদান শুরু: প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ২০১৫ সাল থেকে টেট উত্তীর্ণদের সার্টিফিকেট দেওয়া শুরু করে।
- নিয়মের পরিবর্তন: টেট পাশের পর একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য যোগ্যতা বৈধ থাকে, এই নিয়ম চালু হওয়ার পরেই সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয়টি আসে। বর্তমানে এই মেয়াদ তিন বছর।
- নিয়োগের ধারণা: তখন ধারণা ছিল, টেট পাস করলেই চাকরি নিশ্চিত নয়, এটি শুধুমাত্র একটি যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা।
শিক্ষকদের উদ্বেগ এবং পর্ষদের পদক্ষেপ
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরই মূলত কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ে। পর্ষদের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সার্টিফিকেট সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চেয়ে কর্মরত শিক্ষকদের কাছ থেকে একাধিক ফোন আসছে। তাঁদের এই উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে করছে পর্ষদ।
বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে পর্ষদ পুরনো নথি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে। ২০১২ সালে কী পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল এবং নিয়োগের নিয়মাবলী কী ছিল, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য, দেশজুড়ে শিক্ষার অধিকার আইন (Right to Education Act) কার্যকর হওয়ার পর প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য টেট পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রথম টেট নেওয়া হয়েছিল ২০১২ সালে, যেখানে প্রায় ১২ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছিলেন। পর্ষদের এই নতুন উদ্যোগে হাজার হাজার শিক্ষক কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
